যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৩৯ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানা হয়েছে। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ সামরিক ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তারা। এই কর্মীদের বিমানবন্দরে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে পরিবহন সুবিধাসহ জরুরি সেবা দেওয়া হয়।
এর আগে চলতি বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন মোট ১৮৭ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছিল, যা মিলিয়ে ২০২৪ সালের শুরু থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই সংখ্যা ২২০ ছাড়িয়েছে।
ফেরত আসা এই কর্মীদের মধ্যে ২৬ জনই নোয়াখালীর। এছাড়া কুমিল্লা, সিলেট, ফেনী, ও লক্ষ্মীপুরের দুজন করে এবং চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ এবং নরসিংদীর একজন করে রয়েছেন।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছে, এই ৩৯ জনের মধ্যে অন্তত ৩৪ জন কর্মী জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়ে বৈধভাবে ব্রাজিল গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখান থেকে মেক্সিকো হয়ে তাঁরা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। বাকি পাঁচজনের মধ্যে দুইজন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং তিনজন দক্ষিণ আফ্রিকা হয়ে প্রবেশ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য তাঁরা আবেদন করেছিলেন, তবে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলেন, সরকার বৈধভাবে ব্রাজিলে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেওয়ায় এই কর্মীরা ব্রাজিল যাচ্ছেন নাকি যুক্তরাষ্ট্রে, তা নিশ্চিত করতে সরকার বা এজেন্সির কোনো সতর্কতা বা কৌশল ছিল কি না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, একেকজন ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে শূন্য হাতে ফিরলে তার দায় কার? তিনি এই ঘটনাকে ‘ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক এবং দায়িত্বহীনতা’ বলে মন্তব্য করে এর অনুমোদন প্রক্রিয়ায় থাকা এজেন্সি ও সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান।
তিনি সরকারকে সতর্ক করে বলেন, কয়েক হাজার কর্মী এভাবে ব্রাজিল গেছেন, তাই নতুন করে ব্রাজিলে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার আগে সতর্ক হতে হবে।
এদিকে, ফেরত আসা বাংলাদেশি ও বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এর আগে এ বছরের বিভিন্ন সময়ে প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশিদের হাতে হাতকড়া ও পায়ে শেকল দেখা গেলেও, শুক্রবার ফেরত আসা এই ৩৯ জনের ক্ষেত্রে তেমন কোনো কড়াকড়ি দেখা যায়নি।
মার্কিন আইন অনুযায়ী, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অবস্থানকারী অভিবাসীদের আদালতের রায় বা প্রশাসনিক আদেশে দেশে ফেরত পাঠানো যায়; আশ্রয়ের আবেদন ব্যর্থ হলে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ (আইসিই) তাঁদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

