প্রাথমিকের শিক্ষকরা ফের আন্দোলনে নামছেন

শুক্রবার,

০৭ নভেম্বর ২০২৫,

২৩ কার্তিক ১৪৩২

শুক্রবার,

০৭ নভেম্বর ২০২৫,

২৩ কার্তিক ১৪৩২

Radio Today News

প্রাথমিকের শিক্ষকরা ফের আন্দোলনে নামছেন

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৪:০৪, ৭ নভেম্বর ২০২৫

Google News
প্রাথমিকের শিক্ষকরা ফের আন্দোলনে নামছেন

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবারও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থালা হাতে বিক্ষোভ করে সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ -সমকাল

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবি বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় আবার আন্দোলনে নামছেন। আগামীকাল থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনির্দিষ্টকাল অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

সারাদেশে বিদ্যালয়ে চলতি মাসের মাঝামাঝি শুরু হচ্ছে বার্ষিক পরীক্ষা। এ সময়ে শিক্ষকদের টানা অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে উদ্বেগ জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক করার পরও বেতন ১৩তম গ্রেডে রাখা হয়েছে। অথচ একই যোগ্যতায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা দশম গ্রেডে নিয়োগ পাচ্ছেন। এটি সরাসরি বৈষম্য। শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে শ্রেণিবৈষম্যের অবসান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি।

সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৫ হাজার ৬২০টি। এসব বিদ্যালয়ে পৌনে চার লাখ শিক্ষক কর্মরত। আন্দোলনে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি), সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদসহ কয়েকটি সংগঠন। তারা কমপক্ষে এক লাখ শিক্ষক জড়ো করার পরিকল্পনা নিয়েছে।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তারা দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি চান। এসব দাবি জানিয়ে গত ৩০ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শিক্ষকরা ঘরে ফিরে যান। কিন্তু গত দুই মাসেও সরকারের তরফে কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদের অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আন্তরিক হলেও নানা অজুহাতে প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেছেন, দাবি পূরণে আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই। শিক্ষকদের স্বার্থে রাজপথে নামছি। দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরব।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করে সমকাল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, সহকারী শিক্ষকদের পদকে ‘শিক্ষক’ পদনাম দিয়ে দশম গ্রেড করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

বৈষম্যের অভিযোগ

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা বেতন গ্রেড নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে আন্দোলন করছেন। মাঝে ২০২০ সালে তাদের ১৪তম থেকে ১৩তম গ্রেডে আনে সরকার। এরপর ২০১৮ সালে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক দ্বিতীয় শ্রেণি করার পর থেকে বেতন গ্রেড দশম করার জন্য শিক্ষকরা আবার আন্দোলন শুরু করেন। কারণ হিসেবে শিক্ষকদের ভাষ্য, একই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থেকেও অন্যদের চেয়ে তারা বঞ্চনার শিকার। একই শিক্ষাক্রম, একই সিলেবাস ও একই শিক্ষার্থী নিয়ে কাজ করা পিটিআই-সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতা একই; স্নাতক দ্বিতীয় শ্রেণি। অথচ তাদের বেতন দশম গ্রেডের।

শেরপুর সদরের ইলশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহানুর রহমান রোমান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। অথচ আমাদের বেতন গ্রেড তৃতীয় শ্রেণির, ১৩তম। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর সম্মান ও বেতন নিয়ে আমরা কীভাবে শিশুদের প্রথম শ্রেণির নাগরিক হওয়ার স্বপ্ন দেখাব? আমরা দশম গ্রেডে বেতন চাই।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর আইচাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমান বলেন, আমাকে ২০১৮ সালে চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক করা হয়। সাত বছরেও পূর্ণাঙ্গ পদোন্নতি পাইনি। আমি এখনও তৃতীয় শ্রেণির বেতন ও মর্যাদা পাচ্ছি। সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতি, দশম গ্রেডসহ দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের