বুধবার,

২৭ আগস্ট ২০২৫,

১২ ভাদ্র ১৪৩২

বুধবার,

২৭ আগস্ট ২০২৫,

১২ ভাদ্র ১৪৩২

Radio Today News

অমিত শাহের বিস্ফোরক মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিতে তোলপাড়

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ২৫ আগস্ট ২০২৫

Google News
অমিত শাহের বিস্ফোরক মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিতে তোলপাড়

১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে ভারতজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্র হচ্ছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই বিলের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে।

এমন প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যে নতুন করে আলোড়ন ছড়িয়েছে। সংসদে আলোচনার সময় তিনি বলেন, “আইনের শাসন সবার উপরে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকেও জবাবদিহি করতে হবে, এমনকি পদত্যাগ করতেও হতে পারে।” 

তার এই বক্তব্য নিয়ে সংসদ ভবন থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত চড়ছে বিতর্কের পারদ।

বিলটি পেশের পর থেকেই বিরোধী শিবিরের নেতারা অভিযোগ করছেন—সরকার সংবিধানের মূল কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইছে। 

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, “এটি সংবিধান আক্রমণের সমান, আমরা সর্বাত্মক আন্দোলনে নামব।” 

অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “এই বিল জনগণের কণ্ঠরোধের ফাঁদ। সরকার জনসমর্থন হারিয়ে ভয় দেখানোর পথ বেছে নিয়েছে।”

অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে অমিত শাহ জোর দিয়ে বলেন, “বিরোধীদের আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। সংবিধানের কাঠামো অক্ষুণ্ণ রয়েছে। কিন্তু আইন ভাঙলে বা সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করলে প্রধানমন্ত্রীও রেহাই পাবেন না। আমাদের গণতন্ত্রের শক্তি এটাই।” 

তার এই মন্তব্য বিরোধীদের মধ্যে এক ধরনের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে কাজ করছে। কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেন, “অমিত শাহ নিজেই স্বীকার করেছেন, এই বিলের পর পরিস্থিতি এমন দাঁড়াতে পারে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ অনিবার্য হবে।”

গণমাধ্যমগুলোও ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনাকে বিশ্লেষণ করছে। দ্য হিন্দু লিখেছে—“অমিত শাহের মন্তব্য মূলত সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার দিকটি জোরদার করতে হলেও এটি রাজনৈতিকভাবে বিপরীত বার্তাও বহন করছে।” 

টাইমস অব ইন্ডিয়া বিশ্লেষণে বলেছে—“প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ প্রসঙ্গ টেনে এনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিরোধীদের হাতে অজান্তেই শক্তি তুলে দিলেন।” 

আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে—“এই বিতর্ক থেকে স্পষ্ট, বিজেপি ভেতরেই চাপ অনুভব করছে, যা বিরোধীরা সুযোগ হিসেবে নেবে।”

এদিকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছাত্র সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন এবং নাগরিক মঞ্চগুলোও রাস্তায় নেমেছে। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা বিক্ষোভ করে বলে, “সংবিধান রক্ষা করতে না পারলে কোনও সরকার বৈধ নয়।” মুম্বই, কলকাতা ও চেন্নাইতেও মিছিল হয়েছে।

অর্থনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে বিনিয়োগ ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব আশ্বস্ত করছে—“বিল পাস হওয়ার পর সংবিধান আরও শক্তিশালী হবে।” কিন্তু রাজনৈতিক মহল মনে করছে, অমিত শাহের এই উক্তি বিরোধীদের লড়াইকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের