বুধবার,

২৭ আগস্ট ২০২৫,

১২ ভাদ্র ১৪৩২

বুধবার,

২৭ আগস্ট ২০২৫,

১২ ভাদ্র ১৪৩২

Radio Today News

অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার: ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৫৬, ২৬ আগস্ট ২০২৫

আপডেট: ২১:৫৮, ২৬ আগস্ট ২০২৫

Google News
অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার: ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি

অস্ট্রেলিয়া ইরানের রাষ্ট্রদূত আহমেদ সাদেঘি ও তিন কূটনীতিককে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করে সাত দিনের মধ্যে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পর ইরান কঠোর প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। 

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) জানান, অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপ ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’ এবং কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এর জবাব দেওয়া হবে। 

তিনি আরও বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপ দেশটির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। গাজার ওপর ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভগুলোর প্রভাব এতে গুরুত্বপূর্ণ।’

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ গত মঙ্গলবার অভিযোগ করেছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সিডনির এক ক্যাফেতে আগুন দেওয়ার ঘটনা এবং ডিসেম্বরে মেলবোর্নের একটি সিনাগগে অগ্নিসংযোগের নির্দেশনার পেছনে ইরানের হাত ছিল। যদিও ওই হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, তবুও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান এই পদক্ষেপগুলোকে অস্ট্রেলিয়ার শত্রুতাপূর্ণ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখছে।

তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফোয়াদ ইজাদি বলেন, ‘সাদেঘি ফিলিস্তিনিদের প্রতি প্রকাশ্যভাবে সমর্থন জানাতেন। তার কার্যকলাপই মূলত অস্ট্রেলিয়াকে তাকে বহিষ্কার করেছে। সম্প্রতি দেশটির বিভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত বৃহত্তম ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভগুলোর প্রেক্ষাপটেও এটি প্রভাব ফেলেছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপ মূলত জনগণের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন ও ফিলিস্তিনে গণহত্যাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপের ফল।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই প্রথমবার, যখন অস্ট্রেলিয়া একজন রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেছে। তবে দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে কিছু কূটনৈতিক সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখা হবে। তার কথায়, অস্ট্রেলিয়ার সরকারের লক্ষ্য কেবল কূটনৈতিক অবস্থান শক্ত করা নয়, বরং দেশের নিরাপত্তা ও জনগণের সুরক্ষাও।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, অস্ট্রেলিয়ার পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কূটনীতিক নিয়মের বিরোধী এবং প্রতিশোধমূলক প্রতিক্রিয়ার সুযোগ তৈরি করেছে। পাশাপাশি তারা আশা করছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কথা বলবে এবং ইরানের প্রতি অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করবে।

ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহু অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজকে ‘দুর্বল এবং বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ককে ক্ষুণ্ণ করেছে এবং দেশের ইহুদি সম্প্রদায়কে অবহেলা করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা গাজার যুদ্ধের পর থেকে অন্যান্য ইহুদিবিরোধী হামলায় আইআরজিসর সম্ভাব্য জড়িত থাকার তদন্ত চালাচ্ছে। তবে এই অভিযোগগুলোর কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত উপস্থাপন করা হয়নি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ার এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং সামাজিক চাপের সমন্বয়ে এসেছে। ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি ও উত্তেজনা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে দীর্ঘমেয়াদে প্রভাবিত করতে পারে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের