শনিবার,

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

২১ ভাদ্র ১৪৩২

শনিবার,

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

২১ ভাদ্র ১৪৩২

Radio Today News

ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা মোতায়েন নিয়ে পুতিনের সতর্ক বার্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Google News
ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা মোতায়েন নিয়ে পুতিনের সতর্ক বার্তা

ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার স্বার্থে দেশটিতে সেনা মোতায়েনের যে পরিকল্পনা পশ্চিমা দেশগুলো করছে, তা স্পষ্ট ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিয়েভের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে প্যারিসে শীর্ষ সম্মেলনের পরপরই পুতিন এ বার্তা দিলেন। ওই সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেন, ইউক্রেনের ২৬টি মিত্রদেশ যুদ্ধ বন্ধের পর নিরাপত্তা সহায়তা হিসেবে ‘স্থল, সমুদ্র বা আকাশ’ সেনা মোতায়েনের আনুষ্ঠানিক অঙ্গীকার করেছে।

শুক্রবার বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। পুতিন ইউরোপের দেশগুলোর উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ইউক্রেনে কোনো সেনা মোতায়েন করা হলে তা হবে ‘বৈধ লক্ষ্যবস্তু’। প্যারিস সম্মেলন ও পুতিনের বার্তা ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করল বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে হওয়া শীর্ষ সম্মেলনের অর্জনও বিফলে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছে।

শুক্রবার পুতিন বলেন, ‘আমি ইউক্রেনের নেতার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু আমি খুব বেশি যুক্তিসংগত কিছু দেখছি না। কেন? কারণ, মূল বিষয়গুলোতে ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব।’ 

পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ‘অত্যন্ত গঠনমূলক প্রচেষ্টার’ প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে তিনি ‘যুদ্ধ অব্যাহত রাখার জন্য ইউরোপের দেশগুলোর ভয়াবহ প্রচেষ্টার’ সমালোচনা করেছেন। 

ইউরোপীয়রা যে বাহিনীটি ইউক্রেনে মোতায়েন করতে চায়, সেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘নিশ্চয়তা বাহিনী’। আলাস্কা সম্মেলনের পর থেকে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে গঠিত ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি-পরবর্তী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। তাদের এ প্রচষ্টার মধ্যে আছে– ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করা ও দেশটিতে ‘নিশ্চয়তা বাহিনী’র টহল নিশ্চিত করা। ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ বলেন, ‘যে কোনো নতুন বড় আগ্রাসন’ ঠেকাতে সেনা মোতায়েন করা হবে। এ বাহিনীর উদ্দেশ্য ‘রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরু নয়’ বলেও জানান তিনি। 

গত বৃহস্পতিবারের প্যারিস সম্মেলনে গৃহীত এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি এটাকে ‘প্রথম সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তবে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার সম্পৃক্ততার মাত্রা স্পষ্ট করেনি। 

সম্প্রতি ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, মার্কিন সমর্থন ‘সম্ভবত’ বিমান বাহিনীর সহায়তার আকারে আসতে পারে। জেলেনস্কি বলেন, তিনি ‘ইউক্রেনের আকাশের সর্বোচ্চ সুরক্ষা’ সম্পর্কে মার্কিন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে ‘খুব ভালো আলোচনা’ করছেন। অদূর ভবিষ্যতে তার সঙ্গে আবার কথা বলার পরিকল্পনা করছেন। শুক্রবার পুতিন নিশ্চিত করেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর ‘খোলামেলা আলাপ’ হয়েছে।

কিয়েভ মনে করে, ইউক্রেনে বৃহত্তর শান্তি চুক্তি নিশ্চিত করার আগে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়া উচিত। তবে এ নিয়ে রাশিয়ার দ্বিমত রয়েছে। রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলীয় ভ্লাদিভোস্টক শহরে এক অর্থনৈতিক ফোরামে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, ‘যদি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা দীর্ঘমেয়াদি শান্তির দিকে পরিচালিত করবে, তবে আমি (ইউক্রেনে বিদেশি সেনা) উপস্থিতির কোনো মানে দেখতে পাচ্ছি না।’ তিনি বলেন, রাশিয়া দীর্ঘমেয়াদি শান্তির দিকে পরিচালিত করে, এমন যে কোনো সিদ্ধান্ত ‘পূর্ণরূপে’ মেনে চলবে। 

পুতিন বলেন, তিনি মস্কোতে ইউক্রেনের সঙ্গে একটি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করতে প্রস্তুত। সে জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। বিবিসির স্টিভ রোজেনবার্গ যখন পুতিনের মুখপাত্রকে বলেন, প্রস্তাবটি ইঙ্গিত দেয়, রাশিয়া শান্তি চুক্তির চেয়ে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণে বেশি আগ্রহী। তখন পেসকভ জাবাব দেন, ‘মোটেও না। তাঁকে মস্কোতে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, আত্মসমর্পণের জন্য নয়।’

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের