শুক্রবার,

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

২০ ভাদ্র ১৪৩২

শুক্রবার,

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫,

২০ ভাদ্র ১৪৩২

Radio Today News

খুলি ফ্রিজে

‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’ মাথার ব্র্যান্ডেজে লেখা

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:২০, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আপডেট: ২১:২৩, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Google News
‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’ মাথার ব্র্যান্ডেজে লেখা

‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’ একটি  সতর্কবার্তা। খুলিহীন মাথায় মোড়ানো ব্যান্ডেজে কালো মার্কার দিয়ে লেখা সতর্কবার্তাটি। এটি শুধু সতর্কবার্তা নয়, মামুন মিয়ার জীবনের নাজুক অবস্থারও প্রতিফলন।  

সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষে স্থানীয়দের দেশীয় অস্ত্রের (রামদা) উল্টো পাশের আঘাত লাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুনের মাথায়। আহত অবস্থায় নেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে। তবে গুরুতর অবস্থায় পাঠানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে । পরবর্তীতে অবস্থার আরও অবনতি হলে নেওয়া হয় চট্টগ্রামের বেসরকারি একটি হাসপাতালে। প্রেরণ করা হয় ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ)। খুলি খুলে করা হয় মস্তিষ্কের অপারেশন। আর সেই খুলি রাখা হয়েছে ফ্রিজে। 

এর আগে, ভাড়া বাসার দারোয়ান কর্তৃক চবির নারী শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৩০ আগস্ট (শনিবার) মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষ বাধে । যা ভয়াবহ রূপ নেয় ৩১ আগস্ট (রোববার) বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ। 

সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমোঝোতা করতে জোবরা এলাকায় গেলে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে স্থানীয়রা। এরপরই শুরু হয় সংঘর্ষ। এতে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. কামাল উদ্দিনসহ প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এতে স্থানীয়দের হাতে আহন হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া।

এ হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪২৩ জন আহত শিক্ষার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। যেখানে আশংকাজনক অবস্থায় ছিলেন একাধিক শিক্ষার্থী। এমনকি আইসিইউতে ভর্তি করতে হয় তিনজন শিক্ষার্থীকে। তারমধ্যে একজন ঢাকায় এবং দুইজন চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন মামুন মিয়া। বর্তমানে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালের ১১১৪ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন আছেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অপারেশনের পর মামুনকে আইসিইউ থেকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও মাথার খুলি না থাকায় দীর্ঘদিন বিশ্রামে থাকতে হবে এবং মাথার সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। 

মামুন সম্পর্কে তার বন্ধু চবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মামুনকে গতকাল বিকেলে কেবিনে আনা হয়েছে। ডাক্তার বলেছে পুরোপুরি সুস্থ হতে দুই তিন মাস সময় লাগবে। মামুনের মাথার খুলি খুলে ফ্রিজে রাখা হয়েছে দেড় থেকে দুইমাস পর সেটি লাগানো হবে। যেহেতু ব্রেইন অপারেশন তাই স্বাভাবিক কথাবার্তা বলতে পারছে না।

মামুনের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে পার্কভিউ হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. এটিএম রেজাউল করিম বলেন, মামুন এখন কিছুটা ভালো এবং স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। তাকে কেবিনে রাখা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, মামুনের মাথার খুলি পরে লাগালেও ওর মাথায় ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে মাথায় স্পর্শ না করতে নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হয়েছে। তার মাথার খুলি দেড় মাস পরে লাগানো হবে।

জানা যায়, মামুনের মাথায় স্থানীয়দের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে নাকে ও মুখে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধারণা করা হয়, হামলার সময় শক্ত ও ধারালো বস্তু দিয়ে মামুনের মাথার পেছনের অংশে আঘাত করা হয়েছিলো। যার কারণে তার মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের