
২০২৪ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি. খোজিন। টেক্সটাইল ফোকাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গত বছর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, বৈশ্বিক মন্দা ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রবৃদ্ধির পেছনে প্রধান চালিকাশক্তি হলো রেডিমেড গার্মেন্টস খাত, যা দেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি।
রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ টেক্সটাইল বাজারের আকার প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার, যার একটি বড় অংশ এখনো বিদেশি আমদানির উপর নির্ভরশীল। পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলোর বাজার ছাড়ার পর বাংলাদেশি পোশাক প্রস্তুতকারীদের জন্য যৌথ উদ্যোগ, স্থানীয় উৎপাদন এবং কনট্রাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং–এর মাধ্যমে রাশিয়ান বাজারে প্রবেশের বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত খোজিন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের রাশিয়ার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ট্রেড ফেয়ারে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। এর মধ্যে রয়েছে: টেক্সটাইলেগপ্রম, ইন্টারফ্যাব্রিক, টেক্সটাইল সেলন এবং আরএফটি এক্সপো।
তিনি আরও বলেন, পোশাকের পাশাপাশি কৃষিপণ্য, ওষুধ, চামড়া, পাটজাত ও সামুদ্রিক পণ্যের রপ্তানির মাধ্যমে রাশিয়ায় বাংলাদেশের বাজার সম্প্রসারণ সম্ভব।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো জ্বালানি খাত। রাশিয়ার সহায়তায় দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রূপপুর এনপিপি নির্মাণাধীন রয়েছে, যা ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। একই সঙ্গে গ্যাজপ্রম ইন্টারন্যাশনাল ভোলায় ২০১২ সাল থেকে ২০টির বেশি গ্যাস কূপ খনন করেছে এবং আরও নতুন প্রকল্পে কাজ করতে আগ্রহী।
তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও আর্থিক লেনদেন জটিলতার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে কিছুটা মন্দা দেখা দিয়েছে। রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর উপর সুইফট নিষেধাজ্ঞা লেনদেন প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।
এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে রাষ্ট্রদূত খোজিন বিকল্প পেমেন্ট সিস্টেম এবং বাংলাদেশে রাশিয়ান ব্যাংকের শাখা খোলার প্রস্তাব দেন, যা দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম