অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা বৈষম্যহীন ও স্বচ্ছ বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও এখন তাদের মধ্যেই আগের সরকারের মতো আচরণ দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি অভিযোগ করেন, এই উপদেষ্টারা জনগণের সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে নানা গোপন ও প্রকাশ্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা আ ফ ম মাহবুবুল হকের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান, সেটি বিদেশি কোম্পানিকে দিয়ে দিচ্ছেন। টেন্ডার ছাড়াই শেখ হাসিনা এই কোম্পানিকে দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন। এখন সেই অসমাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারের জোরজবরদস্তি দেখা যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা হুমকি দিয়েছেন, যারা বিরোধিতা করছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে। এমনকি পরিবহন উপদেষ্টা এমন সব কথা বলছেন, যেগুলোর অর্থ দাঁড়ায় জোর করে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সরকারের কাজ সংস্কার করা ও নির্বাচন আয়োজন করা, কিন্তু এখন তা নির্দিষ্ট কিছু দলের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এটাই সমস্যার মূল কারণ। তাদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের কারণেই জটিলতা তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকারের যে ভূমিকা পালনের কথা, সেটি বিকৃত হওয়ার ফলেই আজকের এই পরিস্থিতি।’
সরকারের বৈদেশিক চুক্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘এই সরকার যদি স্থায়ী না হয়, তাহলে স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি করেন কীভাবে? এলএনজি আমদানির মতো দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার এখতিয়ারই বা তাদের কে দিয়েছে? এসব চুক্তি আন্তর্জাতিক বহুজাতিক স্বার্থ পূরণের উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। এর সঙ্গে দেশের দক্ষিণপন্থী স্বার্থের এক ধরনের মিলন ঘটেছে, যা এখনকার সরকারের মধ্যেই প্রতিফলিত হচ্ছে।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ভুঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, লেখক ও বুদ্ধিজীবীরা।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

