
অতি ভারী বৃষ্টির ফলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ইন্দোনেশিয়া। বৃষ্টিতে বন্যা ও ভূমিধসে দেশটিতে ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পর্যটন নগরী বালি রাজ্যেই মারা গেছেন ১৪ জন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। এটি দেশটিতে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। বন্যার ভয়াবহতায় বালিতে এক সপ্তাহের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। খবর আল জাজিরা ও বিবিসির
গত সোমবার থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। ফলে পর্যটন দ্বীপ বালি ও পূর্ব নুসা তেঙ্গারা প্রদেশে বন্যার সৃষ্টি হয়। টানা বৃষ্টিতে ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আন্তারা জানিয়েছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো
বন্যার পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন। তিনি নিখোঁজদের খুঁজে বের করা ও বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসন এবং ত্রাণ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
কর্তৃপক্ষ বলছে, গত কয়েক দিনের টানা অতি বৃষ্টিতে নদীর পানি উপচে এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বন্যা ও ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। প্লাবিত হয়েছে বহু বাড়ি-ঘর, হাসপাতাল, অফিস-আদালত। বিধ্বস্ত হয়েছে রাস্তা-ঘাট। বিবিসিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কমপক্ষে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ ও প্রধান কয়েকটি সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার থেকে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বন্যার পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বালির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় দু’জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।
শুধু বালির রাজধানী দেনপাসারেই আটজন নিহত হয়েছে। সেখানে আরও দুজন নিখোঁজ রয়েছেন। গিয়ানইয়ার নামে একটি এলাকায় নিহত হয়েছে তিনজন। বাদুং কাউন্টিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন্যার কারণে রাজধানীতে দুটি ভবন ভেঙে পড়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ৮৫ জন। বর্তমানে জেমব্রানা ডিস্ট্রিক্টে অস্থায়ী শেল্টার তৈরি করে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আন্তারাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বালির অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার প্রধান নিয়োমান সিদাকার্যা বলেছেন, উদ্ধারকর্মীরা প্লাবিত এলাকায় প্রবেশে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘সব জায়গাই পানিতে তলিয়ে গেছে, এমনকি ট্রাকও কষ্টে চলাচল করছে।’
শুধু বালিই নয়, পাশের প্রদেশ তেংগারাও প্লাবিত হয়েছে। সেখানেও কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।
জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোও চলমান বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হোটেল কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যার কারণে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। নর্দমার মুখে ময়লা-আবর্জনা জমে পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বালির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৩৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যদিও আজ শুক্রবার রাজ্যে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবু বালি এখনো তীব্র আবহাওয়া সতর্কতার মধ্যে রয়েছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম