
ইসরায়েলের দখলকৃত এলাকায় সফল ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ড্রোন হামলার দাবি করেছে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী। তারা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে।
আল-মাসিরাহ টিভির বরাতে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে জানান, বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ‘ফিলিস্তিন ২’ নামের একটি সুপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল দখলকৃত নেগেভ অঞ্চলের একটি সামরিক স্থাপনায় নিক্ষেপ করা হয়। হামলাটি সফল হয়েছে এবং এতে বহু বসতি স্থাপনকারী আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। খবর মেহের নিউজের।
সারি আরও জানান, ড্রোন ইউনিট দুটি পৃথক হামলা চালায়। এর মধ্যে একটি ছিল এলিয়াতের (উম্ম আল-রাশরাশ) কাছে রামোন বিমানবন্দরে দুটি আর অন্যটি ছিল নেগেভে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে একটি ড্রোন ব্যবহৃত হয়।
এই হামলাগুলো গাজায় ইসরায়েলি হামলা এবং ইয়েমেনের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হয়েছে বলে জানানো হয়।
ইয়াহিয়া সারি জানান, ইয়েমেন ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকবে এবং যেকোনো ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব দেয়ার সামর্থ্য রাখে।
এর আগে, আনসারুল্লাহ আন্দোলনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল-আহনুমি সতর্ক করেন, ইয়েমেনের পাল্টা অভিযানে ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলে আর কোনো স্থান নিরাপদ থাকবে না।
তিনি বলেন, সানার তাহরির স্কয়ারে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি হামলা একটি ভয়াবহ অপরাধ, এর জবাব দেয়া হবেই।
তিনি আরও বলেন, ইয়েমেন সামরিক ঘাঁটি, বিমানবন্দর, বসতি এবং অন্যান্য সংবেদনশীল স্থাপনা লক্ষ্য করে আঘাত হানবে।
এর আগে, গত বুধবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাজধানী সানা ও উত্তর প্রদেশ আল-জাওফে প্রায় তিন ডজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ১৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, হামলাগুলো বেসামরিক ও আবাসিক এলাকায় চালানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সানার তাহরির পাড়ার বাড়িঘর, ৬০তম সড়কের পাশে একটি মেডিকেল সেন্টার এবং আল-হাজম শহরে একটি সরকারি ভবন।
একটি সূত্র জানায়, ইসরায়েলি হামলায় ‘২৬ সেপ্টেম্বর’ ও ‘আল-ইয়েমেন’ পত্রিকার প্রধান কার্যালয়েও আঘাত হানা হয়। এতে সাংবাদিকদের মধ্যে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
জাতিসংঘ এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে এবং বলেছে, ইসরায়েলি হামলা তাদের ইয়েমেন কার্যালয়ের কাছাকাছি এলাকাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
এর মাত্র কয়েক দিন আগে, ২৮ আগস্ট ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইয়েমেনের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ গালিব নাসের আল-রাওয়ি এবং আরও কয়েকজন মন্ত্রী নিহত হন।
গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষিতে ইয়েমেন একটি কৌশলগত সমুদ্র অবরোধ কার্যকর করেছে, যার মাধ্যমে ইসরায়েলে সামরিক রসদের সরবরাহ বন্ধ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গাজায় মানবিক সংকট নিরসনে আহ্বান জানানো হয়েছে।
একইসাথে, ইয়েমেনি বাহিনী ইসরায়েল অধিকৃত এলাকায় একাধিক মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জানিয়েছে, ‘যতদিন না ইসরায়েল গাজায় তার স্থল ও বিমান হামলা বন্ধ করছে, ততদিন এসব অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে নারী শিশুসহ অন্তত ৬৪ হাজার ৬৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম