
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের যুবসমাজ ও নারী সমাজ ইসলামকে দারুণভাবে ধারণ করছে। তিনি ডাকসু, জাকসু ও চাকসু (ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন) নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থার কথা উল্লেখ করে দাবি করেন, এই একই চিত্র এখন সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যাচ্ছে। এরই প্রতিচ্ছবি আগামীতে জাতি দেখতে পাবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ কনভেনশন সেন্টারে ঢাকা-১৫ নির্বাচনী আসনের এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি ইসলামের ইতিহাসে নারীদের ভূমিকা ও অবদানের কথাও সমাবেশে তুলে ধরেন।
জামায়াতের আমির বলেন, আমরা অভিভূত হয়ে লক্ষ্য করছি, দুটো সমাজ ইসলামকে দারুণভাবে ধারণ করছে—একটি আমাদের যুবসমাজ, আরেকটি আমাদের মায়েদের সমাজ। আজ পর্যন্ত তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন হয়ে গেছে। সব জায়গায় একই চিত্র—মেয়েদের আস্থা ছাত্রশিবিরের ওপর; তরুণদের আস্থা ছাত্রশিবিরের ওপর। আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও একই চিত্র। এরই ।
তিনি বলেন, যে সমাজে যুবসমাজ সিদ্ধান্ত নেয় এবং নারীরা এগিয়ে আসে, সেই সমাজ ও জাতি পরিবর্তন হতে বাধ্য।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ৯১ শতাংশ মুসলমানের দেশেও নারীদের সম্মান ঘরে-বাইরে কোথাও নেই। জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর কোরআন এবং রাসূলের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে নারীর মর্যাদাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তিনি জানান, জামায়াতের লক্ষ্য হলো এমন একটি রাষ্ট্র গঠন করা যেখানে বাস্তব প্রয়োজনে এবং যোগ্যতা অনুযায়ী নারীরা পুরুষের পাশাপাশি রাষ্ট্র গঠনে অবদান রাখবেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখব না সে কোন ধর্মের, কোন দলের, তার গায়ের রং কী, মুখের ভাষা কী, সে পাহাড়ে থাকে নাকি সমতলে থাকে। সে আমার ভাই, সে আমার বোন, সে এই দেশের নাগরিক—সেই হিসেবে আমরা তাদেরকে পরিচালনা করব।
তিনি উল্লেখ করেন, দায়িত্ব পালনের জন্য যে ব্যক্তি উপযুক্ত, সে দলের বা ধর্মের যেই হোক না কেন, তার হাতেই দায়িত্বের চাবি তুলে দেওয়া হবে।
ডা. শফিকুর রহমান জামায়াতে ইসলামীর প্রধান তিনটি অঙ্গীকার তুলে ধরেন:
১. শিক্ষা ব্যবস্থা: একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। কারণ শিক্ষা ভালো না হলে জাতি কখনো ভালো হতে পারে না। ২. দুর্নীতি নির্মূল: সমাজের প্রতিটি স্তরে গেঁড়ে বসা দুর্নীতি দূর করা। তিনি বলেন, হিমালয়ের মতো পর্বত সমান বাধা আসলেও দুর্নীতির অস্তিত্ব যেন আসমান থেকে মাটিতে নামিয়ে আনতে পারি, সেজন্য লড়াই করব। ৩. ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: প্রত্যেকটি মানুষ যেন তার প্রাপ্ত হক বা ন্যায়বিচার পান, সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
জামায়াতের আমির বলেন, তাঁরা এমন একটি সমাজ চান, যেখানে শাসকেরা তাদের ভুল বা ঘাটতির জন্য জনগণের কাছে মাফ চাইবে এবং বাহবা, প্রশংসা বা কোনো স্লোগান চাইবে না। বরং জনগণের এই ভার বহন করতে পারছেন কি না, সেই ভয়ে তাদের অন্তর কাঁপবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম