
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) নাম বদলে যাচ্ছে। আগামী বছর থেকে ডিআইটিএফের নাম হবে ঢাকা বাণিজ্য মেলা (ডিটিএফ)। ইপিবির কার্যালয়ে সোমবার (১৮ আগস্ট) সংস্থাটির ১৪৮তম পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের মেলা ক্যালেন্ডার এবং ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরের আংশিক মেলা ক্যালেন্ডার অনুমোদন দেয়া হয়।
১৯৯৫ সাল থেকে ডিআইটিএফ আয়োজিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন আগারগাঁওয়ে এই মেলা আয়োজন করা হলেও এখন সেটি পূর্বাচলে যৌথভাবে আয়োজন করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
ইপিবির সম্মেলনকক্ষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) আবদুর রহিম খান, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, মেট্রো চেম্বারের সভাপতি কামরান তানভীর রহমান প্রমুখ।
ডিআইটিএফের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশি-বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতা নিয়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজনের লক্ষ্য ছিল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন এবং স্থানীয় বাজারের সঙ্গে তাদের পরিচিত করানো। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান দূতাবাস বা সরকারি প্রতিনিধিদলের মাধ্যমে অংশগ্রহণ না করে স্থানীয় এজেন্ট বা ব্যক্তির মাধ্যমে অংশ নিচ্ছে। ফলে পণ্য ও সেবার মান যাচাই করা যাচ্ছে না। অনেক সময় মানহীন বা স্থানীয়ভাবে বিদেশি ব্র্যান্ড নামেও উপস্থাপন করা হচ্ছে। বিদেশি ব্র্যান্ড বা উৎপাদকেরা সরাসরি না থাকায় ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। প্রদর্শনীর আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এমন এক বাস্তবতায় মেলার নাম বদলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই ডিআইটিএফে তুরস্ক, পাকিস্তান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের যেসব প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়, তাদের স্টল ঢাকা বাণিজ্য মেলাতেও থাকতে পারবে। সভায় ইপিবির ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মেলা ক্যালেন্ডার এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরের আংশিক মেলা ক্যালেন্ডার অনুমোদন দেয়া হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘প্রতিটি মেলা সম্পর্কে আমাদের একটি বিশ্লেষণ থাকা দরকার। যেখানে আমাদের দেশের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ প্রয়োজন, সেখানে কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। শুধু অংশগ্রহণ নয়, যাতে দেশের উন্নতি হয়, ব্যবসাটা বৃদ্ধি পায়, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।’
রপ্তানিমুখী শিল্প খাত ও উৎপাদকদের জন্য বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারণ এবং বাজার বহুমুখীকরণ কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, ইপিবি একটি স্বতন্ত্র আন্তর্জাতিক সোর্সিং ফেয়ার আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইপিবির পরিচালনা পর্ষদ আগামী নভেম্বরে ‘সোর্সিং বাংলাদেশ ২০২৫’ শীর্ষক মেলা আয়োজনের অনুমোদন দেয়।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সোর্সিং মেলা আয়োজন না করলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশি পণ্যের পরিচিতি বাড়বে না। আমাদের সক্ষমতাও তৈরি হবে না। বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে সোর্সিং মেলার প্রচারণা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম