
বছর ব্যবধানে বাংলাদেশ থেকে আলু রপ্তানি বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। যদিও সেই প্রভাব নেই স্থানীয় বাজারে। রপ্তানিকারকরা বলছেন, সম্ভাবনার পুরোটা কাজে লাগাতে দরকার বিশ্ববাজারে চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে উৎপাদন। এছাড়া সহজ রপ্তানি ব্যবস্থা ও বাজার সম্প্রসারণে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।
গেল বছর সরবরাহ সংকটে চড়া দামে আলু কিনতে হয় ভোক্তাদের। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি উল্টো। বাড়তি উৎপাদনের কারণে বছর ব্যবধানে দর নেমেছে এক তৃতীয়াংশে। ফলে ক্ষতির মুখে কৃষক।
সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে আলু রপ্তানি শুরু করেছে ভেটকেয়ার বিডি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এক বছরে ১৪’শ টন রপ্তানি চুক্তির প্রথম চালানে পাঠানো হয়েছে ২৭ টন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানির সঙ্গে জড়িত চাষীরা তুলনামূলক ভালো দাম পাচ্ছেন অন্যদের চেয়ে।
ভেটকেয়ার বিডি’র হেড অব অপারেশন্স সিরাজুস সালেকীন চৌধুরী জানান, রপ্তানির কারণে চাষীরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। যেসব চাষীর আলু রপ্তানির সুযোগ তৈরি হয়েছে, তারা অন্যদের চেয়ে বেশি লাভ করছেন। ভবিষ্যতে আলুর ফলন বাড়াতে আশাবাদি তারা।
ইপিবির হিসাবে, সবশেষ অর্থবছরে প্রায় দেড় কোটি ডলারের আলু রপ্তানি হয় বিভিন্ন দেশে। যা এর আগের অর্থবছরে ছিল মাত্র ৩৯ লাখ ডলার। সে হিসাবে রপ্তানি বেড়েছে পৌনে তিন গুণ। তারপরও প্রভাব নেই স্থানীয় বাজারে। রপ্তানিকারকরা বলছেন, পরিকল্পিতভাবে উৎপাদন করা গেলে, রপ্তানি আরো বাড়ানো সম্ভব।
বাংলাদেশ আলু রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি ড. ফেরদৌসি বেগম জানান, কোল্ডস্টোরেজের আলু গুলোর স্ক্রিন ঠিক থাকে না। এসব আলু রপ্তানিতে ব্যাঘাত ঘটে। সানশাইন নামে আলুর একটি ভালো জাত এসেছে। এটা বছরে দুই-তিনবার ফলন হয়ে থাকে। জানুয়ারি থেকে রপ্তানি শুরু হয়। আমরা এবার ৫-৬ মাস সময় পেয়েছি।
রপ্তানিকারকদের মতে, আলু রপ্তানিতে বড় সমস্যা তাপ নিয়ন্ত্রিত কন্টেইনারের ঘাটতি। এছাড়া আর্থিক অনিশ্চয়তাও রয়েছে বিভিন্ন দেশে। এসব নিরসনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর।
ইপিবি’র ভাইস-চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কাজ হলো বাণিজ্যকে সম্প্রসারণ করা। এজন্য যেখানে যেতে হয়, আমি যেতে রাজি আছি এবং যাচ্ছি। এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় যাচ্ছি। তাপ নিয়ন্তিত কন্টেইনারের ঘাটতির বিষয়টি কখনও আমার কাছে উঠে আসেনি।
সবশেষ অর্থবছরে দেশে আলুর উৎপাদন ছিল প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টন। যা চাহিদার তুলনায় ৩৯ লাখ টন বেশি। এর মধ্যে রপ্তানি হয় মাত্র ৬২ হাজার টন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম