
কিডনির অসুখ ধীরে ধীরে শরীরে প্রভাব ফেলে। পা ফুলে যাওয়া বা ক্লান্তি—এই সাধারণ উপসর্গগুলো অনেকেই অবহেলা করেন। ফলে রোগ ধরা পড়তে সময় লেগে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, মেয়েরাই এই রোগে বেশি ভোগেন।
ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর নেফ্রোলজি এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব কিডনি ফাউন্ডেশনের মতে, প্রতি বছর প্রায় ছয় লক্ষ নারীর মৃত্যু হয় কিডনির ক্রনিক রোগে আক্রান্ত হয়ে।
কেন মেয়েরা বেশি আক্রান্ত হন?
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ-এর একটি গবেষণাপত্র বলছে, শুধু শারীরিক কারণ নয়, আর্থ-সামাজিক কারণেও নারীরা কিডনি রোগে বেশি আক্রান্ত হন। যেমন-
অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস: অনেকেই জানেন না যে তাদের রক্তচাপ বা সুগার রয়েছে। এই রোগগুলো নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কিডনি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চিকিৎসার প্রতি অনীহা: বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার নারীরা অসুস্থ না হলে চিকিৎসকের কাছে যান না। ফলে রোগ ধরা পড়ে দেরিতে।
সুনির্দিষ্ট রোগের প্রভাব: লুপাস নেফ্রাইটিস (এক ধরনের অটোইমিউন রোগ) ও ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন মেয়েদের মধ্যে বেশি হয়। এর ফলে কিডনির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ে।
গর্ভাবস্থার জটিলতা: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বারবার ইউরিন ইনফেকশন বা রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও কিডনির ঝুঁকি বাড়ে।
কী করলে কিডনির রোগ প্রতিরোধ করা যাবে?
পানি খান নিয়মমাফিক: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। কতটা পানি আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজন, তা চিকিৎসকের পরামর্শে জেনে নিন।
ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন: নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। লবণ ও চিনি খাওয়ার পরিমাণ কমান।
প্রোটিন খাবার পরিমিতভাবে খান: মাছ, ডিম, মাংস ইত্যাদি কমিয়ে চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী খান। কারণ এগুলো দুর্বল কিডনির ওপর বাড়তি চাপ ফেলে। ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
নিয়মিত টেস্ট করান: যাদের রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস আছে, তাদের বছরে অন্তত একবার ইউরিন, ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন ও অ্যালবুমিন পরীক্ষা করানো উচিত— যদি কোনো উপসর্গ নাও থাকে।
নারীদের কিডনি রোগের ঝুঁকি বেশি হলেও সচেতনতা ও নিয়মমাফিক জীবনযাপনের মাধ্যমে এই রোগ অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব। শরীরকে ভালোবাসুন, যত্ন নিন
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম